ওজুর ফরজ সুন্নাত ও মুস্তাহাবসমূহ

মুসলমানদের উপাসনা বা প্রার্থনার জন্য অজুর প্রয়োজন হয়, ওজুর উদ্দেশ্য হলো পবিত্রতা অর্জন করা। তাই সঠিক নিয়মে ওজু করতে হয়, আজকে ওজুর নিয়ম বা ওজুর ফরজ সন্নাত ও মুস্তাহাবসমুহ সম্পর্কে জানাবো।

ওজুর ফরজগুলো কি কি

(১) কপালের উপরিভাগে চুল উঠিবার স্থান হইতে থুতনীর নীচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি হইতে অপর কানের লতি পর্যন্ত সমগ্ৰ মুখমণ্ডল ধৌত করা, (২) উভয় হাতের আঙ্গুলের অগ্রভাগ হইতে কনুই পর্যন্ত ধৌত করা, (৩) উভয় পায়ের গিরা হইতে সমস্ত পদতল ধৌত করা, (৪) মাথার এক চতুর্থাংশ মাসেহ করা। উল্লেখিত স্থানগুলি একবার ধৌত করা ফরজ কিন্তু তিনবার করিয়া ধৌত করা সুন্নাত। যে সকল স্থান ধৌত করা ফরজ, তাহার মধ্যে এক চুল পরিমাণ স্থান শুকনা থাকিলেও ওজু করা সহীহ্ হইবে না।

ওজুর সুন্নাত সমূহ

(১) নিয়ত করা, (২) বিছমিল্লাহ বলিয়া ওজু করিতে আরম্ভ করা, (৩) মেছওয়াক করা (মেছওয়াকের অভাবে অঙ্গুলির দ্বারা দাঁত মর্দন করা), (8) তিনবার কুলি করা ও কুলি করিবার সময় গলার ভিতরে পানি লইয়া গড়গড়া করা, (৫) তিনবার নাকে পানি দেওয়া, (৬) দাড়ি খেলাল করা, (৭) হাতের ও পায়ের অঙ্গুলি খেলাল করা, (৮) ওজুর অঙ্গগুলির প্রত্যেকটি তিনবার করিয়া ধৌত করা, (৯) উভয় কান মাসেহ করা,

অর্ডার করতে ক্লিক করুন
Ad 2

(১০) ওজুর তরতীবের প্রতি দৃষ্টি রাখা। অর্থাৎ প্রথমে হাতের কবজা, তৎপর মুখ, তৎপর হাতের কনুই পর্যন্ত ধৌত করা, তৎপর মাথা মাসেহ করা, তৎপর পা ধৌত করা, (১১) এক অঙ্গ শুষ্ক না হইতেই অন্য অঙ্গ ধৌত করা, (১২) ওজুর অঙ্গ ধুইবার সময় মর্দন করা, (১৩) অতিরিক্ত পানি খরচ না করা, (১৪) মাথার সামনের দিক হইতে পিছন দিকে মাসেহ করা, (১৫) মুখমণ্ডলে সজোরে পানি নিক্ষেপ না করা। (১৬) হাত পা ধুইবার সময় অঙ্গুলির অগ্রভাগ হইতে আরম্ভ করা, (১৭) দুই পা ধুইবার সময় ডান হাতে পানির পাত্র লইয়া বাম হাতের দ্বারা পা মর্দন করা।

অর্ডার করতে ক্লিক করুন
Ad 1

ওজুর মুস্তাহাব সমূহ

(১) প্রথমে ডান পরে বাম অঙ্গ ধৌত করা। (২) গর্দান মাসেহ করা। (৩) কেবলামুখী বসিয়া ওজু করা। (৪) ভিজা অঙ্গুলি কানের মধ্যে প্রবেশ করাইয়া কানের ভিতর মাসেহ্ করা। (৫) মাজুর ব্যতীত অন্য লোক নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার পূর্বেই ওজু করা। (৬) হাতের আংটি ও কানের, বালা ওজু করিবার সময় ঘুরাইয়া উহার নীচে পানি প্রবেশ করান। (৭) ওজু করিবার সময় বিনা কারণে অন্যের সাহায্য না লওয়া। (৮) ওজু করিবার সময় কথাবার্তা না বলা। (৯) সম্ভব মত উচ্চস্থানে বসিয়া ওজু করা। (যাহাতে ওজুর পানি গড়াইয়া যায়।)

অর্ডার করতে ক্লিক করুন
Ad 3

(১০) মুখে নিয়ত পাঠ করা। (১১) প্রত্যেক অঙ্গ ধৌত করিবার কালে বিসমিল্লাহ পাঠ করা। (১২) বাম হাত দ্বারা উভয় পা মর্দন করা। (১৩) ওজু করা শেষ হইলে সূরা কদর পাঠ করা। (১৪) স্ত্রীলোকের ওজু করার অবশিষ্ট পানির দ্বারা ওজু না করা। (১৫) ওজুর পানি খুব কম না লওয়া । (১৬) ওজুর পাত্র বাম দিকে রাখা। (১৭) মুখমণ্ডল ধৌত করিবার সময় উপরের দিক হইতে আরম্ভ করা। (১৮) বাম হাতের দ্বারা নাকের পানি ঝাড়িয়া ফেলা। (১৯) ধীরে ধীরে ওজু করা। (২০) ভুরু ও গোফের নীচে পানি প্রবেশ করান। (২১) পাক স্থানে বসিয়া ওজু করা। (২২) রৌদ্রের তাপে গরম পানির দ্বারা ওজু না করা । (২৩) ওজু থাকিতে পুনরায় ওজু করা।

ওজুর মাকরূহ সমূহ

(১) মুখে ও অন্যান্য অঙ্গে সজোরে পানি নিক্ষেপ করা। (২) অতি সামান্য পানির দ্বারা ওজু করা। (৩) অতিরিক্ত পানি খরচ করা। (৪) স্ত্রীলোকের ওজুর অবশিষ্ট পানির দ্বারা ওজু করা। (৫) নাপাক স্থানে বসিয়া ওজু করা। (৬) থুথু বা কফ নিক্ষেপ করা পানির দ্বারা ওজু করা।

(৭) বাম হাতে পানি লইয়া কুলি করা। (৮) ডান হাতের দ্বারা নাকের পানি ঝাড়া । (৯) নিজের জন্য ওজুর পাত্র আলাদা করিয়া রাখা। (১০) ওজুর পানিতে ফুঁক দেওয়া। (১১) ওজু করিবার সময় সাংসারিক কথা বলা (১২) সতর খুলিয়া ওজু করা। (১৩) সূর্যের তাপে গরম পানির দ্বারা ওজু করা ।

যে সব কারণে ওজু ভঙ্গ হয়

(১) মলমূত্র নির্গত হইলে। (২) স্ত্রীলোকের সহিত হাসি-রহস্য করিবার সময় লিঙ্গদ্বার দিয়া তরল পদার্থ নির্গত হইলে। (৩) মলদ্বার, লিঙ্গ বা যোনিদ্বার হইতে পাথর বা কৃমি বাহির হইলে। (৪) শরীর হইতে রক্ত বা পুঁজ বাহির হইয়া গড়াইয়া গেলে। (৫) মুখ ভরিয়া বমি করিলে। (৬) মলদ্বার হইতে বায়ু নির্গত হইলে। (৭) পাগল বা উন্মাদ হইলে। (৮) নামাযের মধ্যে হা হা করিয়া হাসিলে। (৯) স্ত্রী-পুরুষ একে অপরের লিঙ্গ স্পর্শ করিলে । (১০) নিদ্রা গেলে।

সঠিক নিয়মে ওজু করা এবাদতের একটি অংশ, এবাদত সফলভাবে পালন করতে হলে এগুলো মানতেই হবে। না হয় এবাদত কবুল হবেনা। তাই আজ থেকে সঠিক নিয়মে অজু করে যে কোন উপাসনা করবেন।

আরো পড়ুন- ইসমে আ’যমের ফযীলত বাংলায় ইসমে আজম

Leave a Comment

বিশ্বস্ত হারবাল শপের ঠিকানা